Wednesday, February 9, 2022

দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়েছে কীভাবে?


বাংলাদেশ এখন স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পদোন্নতি পেয়েছে। কারো যদি শস্য পরিমাণ দেশপ্রীতি থাকে তার কাছে নিশ্চয়ই এ খবরটি আনন্দের। তার অর্থ হচ্ছে আমাদের জীবনযাত্রার মান উন্নতির দিকে ধাবিত হচ্ছে।  এমন সুসময়ে দেশের মানুষ খুশির ঢেকুর তুলবে এটাই স্বাভাবিক। 
খুশির সংবাদ হলো , গতকাল বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) ২০২০-২১ অর্থ বছরে চূড়ান্ত হিসাব প্রকাশ করেছে। পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এ তথ্য আনুষ্ঠানিকভাবে গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন। গণমাধ্যম বেশ ভালোভাবেই গুরুত্বপূর্ণ খরবটির কভারেজ দিয়েছে। দেশে গেছে, দেশের অর্থনীতির আকার বড় হচ্ছে। মাথাপিছু আয় বেড়েছে। গত অর্থবছর (২০২০-২১) মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) নয় মাসের সাময়িক হিসাবে ২ হাজার ৫৫৪ মার্কিন ডলার দেখানো হয়েছিল। ২০২০-২১ অর্থবছর শেষে চূড়ান্ত হিসাবে মাথাপিছু আয় বেড়ে ২ হাজার ৫৯১ মার্কিন ডলার হয়েছে। চূড়ান্ত হিসাবে আয় বেড়েছে ৩৭ মার্কিন ডলার। টাকার অঙ্কে যার পরিমাণ হলো ৩ হাজার ১৬৩ টাকা। 

এখানে তো কেবল আয় দেখানো হলো। ব্যয়ের হিসাব দেখানোর প্রয়োজন আছে বৈকি? উত্তরটা ‘না’ মনে হচ্ছে । কারণ বিবিএস আয়ের হিসাব দেখিয়েই ভীষণ খুশি। সরকারের নীতি এটিই।

আমরা যদি আয়ের হিসাবটা দেখি তাহলে দেখা যাবে তিন মাসের মধ্যে আমাদের আয় বেড়েছে ১ দশমিক ৪৬ শতাংশ। অপরদিকে এই সময়ের মধ্যে ব্যয় কতটুকু বেড়েছে তার হিসাব পকেটের মানিব্যাগের দিকে তাকালে বেশ ভালোই অনুধাবন করবেন। গণপরিবহনের ভাড়া বেড়েছে ২৬ শতাংশ। নিত্যপণ্যের দাম তো পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। এর হিসাব দিয়ে হতাশা বাড়াতে উৎসাহিত না হওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ বলে মনে করি। দেশের উন্নয়নের মাত্রা ‍নিরূপণে আরো কত ধরনের সূচক আছে সেগুলো না হয় বাদই দিলাম।

একটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের মাপকাঠি হিসেবে কেবল প্রবৃদ্ধি আর মাথাপিছু আয় হিসাব করলেই হবে না। তার সাথে যে জিনিসটা ভাবা আবশ্যক তা হলো পার্চেজিং পাওয়ার প্যারিটি (পিপিপি)। মানে ক্রয় ক্ষমতার সূচক। আপনার আয় বেড়েছে, বেশ ভালো কথা।কিন্তু আপনার বর্ধিত আয়ে ক্রয় ক্ষমতা কতটুকু বেড়েছে সে বিষয়টা একটু খতিয়ে দেখা প্রয়োজন বোধ করি। যদি আপনার ক্রয় ক্ষমতা বাড়ে তাহলেই বলতে পারেন আপনার মাথাপিছু আয় বেড়েছে। 

মাথাপিছু হিসাবটা যদিও গড়ের তবে কার আয় কত, আয়ের মিন ডেভিয়েশন কত, কারা সাগরের তিমি আর কারা পুঁটি,  সেসব বিষয়গুলো না হয় ইগনোরই করলাম। 

গতকাল আরেকটা ছবি গণমাধ্যম বারবার আমার সামনে নিয়ে আসছিল। দেখা যায়,, আয় বাড়ার পরেও এক উন্নয়নশীল ব্যক্তি পলিথিনে ১০ টাকার তেল খরিদ করছেন।  ছবিটি আমাদের কি জানান দিচ্ছে তা হয়ত বুঝে গেলে অর্থনীতির আকার বড় হওয়ার খবরটি ফলাও করে ছাপা যাবে না।

তবে আমরা চাই ফলাও করে অর্থনীতির আকার বড় হওয়ার খবর ছাপা হোক।দেশ ভালো থাকুক। মানুষের মুখে অকৃত্রিম হাসি ফুটুক।    

No comments:

Post a Comment

জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি অযৌক্তিক

 কয়েকদিন আগে একটি সংবাদমাধ্যম নিউজ করেছে, দেশে পেট্রোল আছে ১১ দিনের আর অকটেন আছে ১৩ দিনের। পরে জানলাম, সাব-এডিটর ভুলবশত এই উপাত্ত দিয়েছে। তা...